ঝড়-বাতাস শুরু হলে যে দোয়াটি পড়বেন

সংগৃহীত ছবি

 

 

আল্লাহ তাআলা বান্দাদের সতর্ক ও পরীক্ষা করার জন্য নানা দুর্যোগ ও বিপদ-মসিবত দিয়ে থাকেন। তেমনি একটি দুর্যোগের নাম ঘূর্ণিঝড়। ঘূর্ণিঝড়ের কথা শুনলেই উপকূলবর্তী মানুষগুলো ভয়ে আঁতকে ওঠে। কেননা অতীতে একাধিকবার প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত হতে হয়েছে তাদের। সম্প্রতি বঙ্গোপসাগরে আরেকটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়েছে। নাম মোখা। যেটির গতিপথ এখনও বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও ভারতের দিকে বলেই মনে হচ্ছে। উপকূলবর্তী মানুষগুলো তাই এখন খুব আতঙ্কে আছে। এমন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে নফল নামাজ, তাওবা-ইস্তেগফার এবং দান-সদকা গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। সাথে গুরুত্বপূর্ণ কিছু দোয়ার কথাও এসেছে হাদিসে।

 

তেমনই একটি দোয়া হলো— اللهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ خَيْرَهَا، وَخَيْرَ مَا فِيهَا، وَخَيْرَ مَا أُرْسِلَتْ بِهِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا، وَشَرِّ مَا فِيهَا، وَشَرِّ مَا أُرْسِلَتْ بِهِ উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খাইরাহা ওয়া খাইরা মা-ফিহা ওয়া খাইরা মা-উরসিলাত বিহি, ওয়া আউজুবিকা মিন শাররিহা ওয়া শাররি মা-ফিহা ওয়া শাররি মা-উরসিলাত বিহি। অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট প্রার্থনা করি এই ঝড়ের কল্যাণ, এর মধ্যস্থিত কল্যাণ, এর সঙ্গে প্রেরিত কল্যাণ। আমি আপনার নিকট পানাহ চাই এই ঝড়ের অনিষ্ট থেকে, এর মধ্যস্থিত অনিষ্ট থেকে, এর সঙ্গে প্রেরিত অনিষ্ট থেকে।

আয়েশা (রা.) বলেন, যখন আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হতো এবং ঝড়ো বাতাস বইত, রাসুলুল্লাহ (স.)-এর চেহারায় চিন্তার রেখা ফুটে উঠত। এই অবস্থা দেখে তিনি এদিক-সেদিক পায়চারি করতে থাকতেন এবং এ দোয়া পড়তেন। (বুখারি: ৩২০৬; মুসলিম: ৮৯৯; তিরমিজি: ৩৪৪৯)

 

বৃষ্টিপাত বেশি হলে সময় মহানবী (স.) এই দোয়া পড়তেন— اللَّهُمَّ حَوَالَيْنَا ولَا عَلَيْنَا، اللَّهُمَّ علَى الآكَامِ والظِّرَابِ، وبُطُونِ الأوْدِيَةِ، ومَنَابِتِ الشَّجَرِ উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা হাওয়া-লাইনা, ওয়ালা আলাইনা; আল্লাহুম্মা আলাল আ-কাম ওয়াজ জিরাব ওয়া বুতুনিল আওদিআ; ওয়া মানাবিতিস শাজার। অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমাদের আশপাশে বৃষ্টি দিন, আমাদের ওপরে নয়। হে আল্লাহ! পাহাড়-টিলা, খাল-নালা এবং গাছ-উদ্ভিদ গজানোর স্থানগুলোতে বৃষ্টি দিন।’ (বুখারি: ১০১৪)

 

বজ্রপাত ও বিজলি চমকানোর সময় রাসুলুল্লাহ (স.) এই দোয়া পড়তেন— اللَّهُمَّ لاَ تَقْتُلْنَا بِغَضَبِكَ وَلاَ تُهْلِكْنَا بِعَذَابِكَ وَعَافِنَا قَبْلَ ذَلِكَ উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা লা-তাক্বতুলনা বিগাজাবিকা, ওয়া লা-তুহলিকনা বিআজা-বিকা; ওয়া আ-ফিনা-ক্বাবলা জা-লিকা।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ! গজব দিয়ে আমাদের নিঃশেষ করবেন না, আজাব দিয়ে আমাদের ধ্বংস করবেন না; এর পূর্বেই আমাদের ক্ষমা করে দিন।’ (তিরমিজি: ৩৪৫০; নাসায়ি: ৯২৭)

 

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুলুল্লাহ (স.) বজ্রপাতের শব্দ শুনলেই পড়তেন, ‘সুবহানাল্লাজি ইয়ুসাব্বিহুর রা‘অদু বিহামদিহি।’ অন্য রেওয়ায়েতে আছে, ‘যে ব্যক্তি বজ্রের আওয়াজ শুনে এ দোয়া পড়বে, ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি’, সে বজ্রে আঘাতপ্রাপ্ত হবে না। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা: ২৯২১৩)

 

এছাড়াও আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনার বিভিন্ন মাসনুন দোয়া, গুনাহ মাফের দোয়া এবং বিপদ-মসিবতের দোয়া হিসেবে পরিচিত দোয়া ইউনুস পড়াও দুর্যোগের সময়ের অন্যতম আমল। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে কোরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী দোয়া-আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

সূএ : ঢাকা মেইইল ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» আওয়ামী লীগ জাতীয় সংসদকে অপবিত্র করেছে : আলাল

» কাতারের মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানি হামলা, স্যাটেলাইট চিত্রে যা দেখা গেলো

» ১১ জুলাইকে ‘প্রথম প্রতিরোধ দিবস’ ঘোষণা উপদেষ্টা আসিফের

» তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জয়পুরহাটে বিএনপি নেতা ফয়সল আলীমের গণসংযোগ  

» বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের উপকূলের বসতবাড়ি থেকে ৬ ফুট লম্বা পদ্মগোখরা উদ্ধার, এলাকায় চাঞ্চল্য

» মোরেলগঞ্জে তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এসএসসি সমমান পরীক্ষায় শতভাগ ফেল

» দুর্বৃত্তদের গুলিতে যুবদল নেতা নিহত

» ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুল শিক্ষিকা নিহত

» পরীমণির ভিডিও ভাইরাল!

» জুলাই সনদ, বিচার, নির্বাচন সব প্যাকেজ আকারে হতে হবে: হাসনাত আব্দুল্লাহ

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

ঝড়-বাতাস শুরু হলে যে দোয়াটি পড়বেন

সংগৃহীত ছবি

 

 

আল্লাহ তাআলা বান্দাদের সতর্ক ও পরীক্ষা করার জন্য নানা দুর্যোগ ও বিপদ-মসিবত দিয়ে থাকেন। তেমনি একটি দুর্যোগের নাম ঘূর্ণিঝড়। ঘূর্ণিঝড়ের কথা শুনলেই উপকূলবর্তী মানুষগুলো ভয়ে আঁতকে ওঠে। কেননা অতীতে একাধিকবার প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত হতে হয়েছে তাদের। সম্প্রতি বঙ্গোপসাগরে আরেকটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়েছে। নাম মোখা। যেটির গতিপথ এখনও বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও ভারতের দিকে বলেই মনে হচ্ছে। উপকূলবর্তী মানুষগুলো তাই এখন খুব আতঙ্কে আছে। এমন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে নফল নামাজ, তাওবা-ইস্তেগফার এবং দান-সদকা গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। সাথে গুরুত্বপূর্ণ কিছু দোয়ার কথাও এসেছে হাদিসে।

 

তেমনই একটি দোয়া হলো— اللهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ خَيْرَهَا، وَخَيْرَ مَا فِيهَا، وَخَيْرَ مَا أُرْسِلَتْ بِهِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا، وَشَرِّ مَا فِيهَا، وَشَرِّ مَا أُرْسِلَتْ بِهِ উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খাইরাহা ওয়া খাইরা মা-ফিহা ওয়া খাইরা মা-উরসিলাত বিহি, ওয়া আউজুবিকা মিন শাররিহা ওয়া শাররি মা-ফিহা ওয়া শাররি মা-উরসিলাত বিহি। অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট প্রার্থনা করি এই ঝড়ের কল্যাণ, এর মধ্যস্থিত কল্যাণ, এর সঙ্গে প্রেরিত কল্যাণ। আমি আপনার নিকট পানাহ চাই এই ঝড়ের অনিষ্ট থেকে, এর মধ্যস্থিত অনিষ্ট থেকে, এর সঙ্গে প্রেরিত অনিষ্ট থেকে।

আয়েশা (রা.) বলেন, যখন আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হতো এবং ঝড়ো বাতাস বইত, রাসুলুল্লাহ (স.)-এর চেহারায় চিন্তার রেখা ফুটে উঠত। এই অবস্থা দেখে তিনি এদিক-সেদিক পায়চারি করতে থাকতেন এবং এ দোয়া পড়তেন। (বুখারি: ৩২০৬; মুসলিম: ৮৯৯; তিরমিজি: ৩৪৪৯)

 

বৃষ্টিপাত বেশি হলে সময় মহানবী (স.) এই দোয়া পড়তেন— اللَّهُمَّ حَوَالَيْنَا ولَا عَلَيْنَا، اللَّهُمَّ علَى الآكَامِ والظِّرَابِ، وبُطُونِ الأوْدِيَةِ، ومَنَابِتِ الشَّجَرِ উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা হাওয়া-লাইনা, ওয়ালা আলাইনা; আল্লাহুম্মা আলাল আ-কাম ওয়াজ জিরাব ওয়া বুতুনিল আওদিআ; ওয়া মানাবিতিস শাজার। অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমাদের আশপাশে বৃষ্টি দিন, আমাদের ওপরে নয়। হে আল্লাহ! পাহাড়-টিলা, খাল-নালা এবং গাছ-উদ্ভিদ গজানোর স্থানগুলোতে বৃষ্টি দিন।’ (বুখারি: ১০১৪)

 

বজ্রপাত ও বিজলি চমকানোর সময় রাসুলুল্লাহ (স.) এই দোয়া পড়তেন— اللَّهُمَّ لاَ تَقْتُلْنَا بِغَضَبِكَ وَلاَ تُهْلِكْنَا بِعَذَابِكَ وَعَافِنَا قَبْلَ ذَلِكَ উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা লা-তাক্বতুলনা বিগাজাবিকা, ওয়া লা-তুহলিকনা বিআজা-বিকা; ওয়া আ-ফিনা-ক্বাবলা জা-লিকা।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ! গজব দিয়ে আমাদের নিঃশেষ করবেন না, আজাব দিয়ে আমাদের ধ্বংস করবেন না; এর পূর্বেই আমাদের ক্ষমা করে দিন।’ (তিরমিজি: ৩৪৫০; নাসায়ি: ৯২৭)

 

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুলুল্লাহ (স.) বজ্রপাতের শব্দ শুনলেই পড়তেন, ‘সুবহানাল্লাজি ইয়ুসাব্বিহুর রা‘অদু বিহামদিহি।’ অন্য রেওয়ায়েতে আছে, ‘যে ব্যক্তি বজ্রের আওয়াজ শুনে এ দোয়া পড়বে, ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি’, সে বজ্রে আঘাতপ্রাপ্ত হবে না। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা: ২৯২১৩)

 

এছাড়াও আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনার বিভিন্ন মাসনুন দোয়া, গুনাহ মাফের দোয়া এবং বিপদ-মসিবতের দোয়া হিসেবে পরিচিত দোয়া ইউনুস পড়াও দুর্যোগের সময়ের অন্যতম আমল। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে কোরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী দোয়া-আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

সূএ : ঢাকা মেইইল ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com